নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
০৫:০৪ পূর্বাহ্ন
আবারও সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার। সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে সোমবার এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। কিন্তু সাক্ষী না আসায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার সবশেষ সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল গত ১০ মার্চ। করোনা পরিস্থিতির কারণে কিছুদিন এবং সাক্ষী না আসায় কয়েকটি ধার্য তারিখে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। সাক্ষী না আসায় সোমবারও ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল জজ মো. নুরুল আমিন আবারও সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে দেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনায় গঠিত আইনজীবী প্যানেলের সদস্য মোহাম্মদ মনির উদ্দিন সিলেট মিররকে বলেন, ‘সাক্ষীরা কেউ সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার কারাবন্দি দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করবেন।’
আইনজীবী প্যানেল সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। বাকি ১০ জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। এই তিনজন হচ্ছেন সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন পরিদর্শক ও সিআইডির তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
এদিকে, বারবার মামলার তারিখ পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনন্ত বিজয় দাশের স্বজনরা। ৬ বছরেও এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ না হওয়ায় হতাশা তাদের কণ্ঠে।
অনন্ত বিজয়ের ভগ্নিপতি আইনজীবী সমর বিজয় সী শেখর সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমরা বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছি। কিন্তু বারবার সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুব হতাশার। জানি না কোনোদিন ন্যায়বিচার পাব কি না।’
প্রসঙ্গত, গত ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারের কলাপাড়া এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত।
হত্যাকা-ের এক দিন পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে কানাইঘাটের আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) পলাতক। কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) কারাগারে আছেন। ফারাবী ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলারও আসামি।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত ১৯ সালের ৭ মে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে বারবার পেছানো হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। দীর্ঘদিন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলার পর গেল বছর মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
এনপি