শাবি প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
১১:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
১১:২৪ অপরাহ্ন
কক্সবাজারের রক্ষিত ঝিলংজা বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বন বিভাগ ও সংসদীয় কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে প্রশাসন একাডেমির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রফেশনাল ফরেস্ট্রি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাস্ট (বাফসা)।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাফসা সাস্ট এর সাধারণ সম্পাদক মো. রিফাত হোসেন এবং সহ-সভাপতি আদেল মাহমুদ জাদ্দারী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের পাশে রক্ষিত ঝিলংজা বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বন বিভাগ ও সংসদীয় কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে প্রশাসন একাডেমির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এতে বনভূমি ও জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পতিত হবে। এরূপ পরিকল্পনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
এতে উল্লেখ করা হয়, এই জমির বাজারমূল্য ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। কিন্তু দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। জমিটি কোনো অকৃষি খাস জমি নয়। এই বনভূমিতে ৫৮ প্রজাতির বৃক্ষ আছে। এতে রয়েছে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুর, মোস, কড়ই, বাটনা, ভাদি, বহেরাসহ অনেক দুর্লভ প্রজাতি। বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে এশীয় বন্য হাতি, বানর, বন্য শূকর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও পাখি।
১৯৯৯ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নকে 'প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ)' হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০১ সালে দেশের বনভূমির যে তালিকা করা হয়, তাতেও ঝিলংজা মৌজা বনভূমি হিসেবে আছে। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমির ইজারা দেওয়া বা না দেওয়ার এখতিয়ার কেবল বন বিভাগের। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ জমি বরাদ্দ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এই বনভূমি দখলে উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, দেশের অন্যতম জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বনভূমিকে অকৃষি খাস জমি হিসেবে দেখানো। এই পরিকল্পনা বন আইন ১৯২৭ এর পরিপন্থী। কক্সবাজারে বনভূমিতে প্রশাসনিক একাডেমি করা অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকারক। বন বিভাগের জমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। বাংলাদেশে বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে অর্ধেকেরও কম। তাই এভাবে বনভূমি দখল হতে থাকা দেশের অর্থনীতি এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উক্ত পরিকল্পনা বণ্যপ্রানী আইন, ২০১২ এর ১৪ অনুচ্ছেদ রক্ষিত অঞ্চলে নিষিদ্ধ কার্য আইনের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। এ অঞ্চলে কোনো বনভূমি উজার করা, জীববৈচিত্রের ক্ষতি করা, বাস্তুসংস্থান ও খাদ্য সংকট তৈরি করা নিষিদ্ধ। দেশের প্রচলিত পরিবেশ বিষয়ক আইনের সরাসরি লঙ্ঘনে ছাত্র সমাজ উদ্বিগ্ন। এমন পরিকল্পনায় দেশের বনভূমি রক্ষা আইনের বাস্তবায়ন নিয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত। আমরা আশা করছি এরূপ আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সরে আসবে।
এনএইচ/আরআর-০৫