সিলেটে বিদ্যালয় খুলছে, তবে সরছে না মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
০৪:২২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
০৪:২২ পূর্বাহ্ন



সিলেটে বিদ্যালয় খুলছে, তবে সরছে না মেলা
# উপশহর একাডেমির মাঠে পড়ে আছে মেলার সরঞ্জাম # গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বলছে অবৈধ

দীর্ঘ দেড়বছর পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিষ্কারসহ শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে সিলেটের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কিন্তু নগরের উপশহরস্থ শাহজালাল উপশহর একাডেমির সামনের মাঠে এখনও পড়ে আছে মেলার সরঞ্জাম। 

মেলার সরঞ্জাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও রয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও মাঠে মেলার সরঞ্জাম রাখাকে অবৈধ বলছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। প্রথম দিকে শুধু চলতি ও আগামী বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। বাকি শ্রেণিগুলোর ক্লাস সপ্তাহে একদিন করে হবে। এ অবস্থায় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে সিলেটের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের প্রস্তুতি শেষ করেছে। তবে সিলেট নগরের উপশহর ই বøকস্থ শাহজালাল উপশহর একাডেমির সামনের মাঠে এখনও মেলার সরঞ্জাম পড়ে আছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে গণটিকার কার্যক্রম চলছে। বিদ্যালয়ের পাশের মাঠে রয়েছে মেলার সরঞ্জাম। মেলার স্টলে প্রায় ঘেরা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। 

জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপশহরের ই ব্লকের খেলার মাঠে যৌথভাবে মেলা আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) ও তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস)। কিন্তু করোনার কারণে মেলার শুরুর আগেই বন্ধ হয়ে যায়। মেলা বন্ধ হলেও এখনও স্টল ও সরঞ্জাম সরিয়ে নেননি আয়োজকেরা। 

স্থানীয়রা জানান, মাঠটিতে উপশহর ও আশপাশ এলাকার তরুণরা খেলাধুলা করেন। কিন্তু মেলার সরঞ্জাম থাকায় তারা প্রায় ৫ মাস ধরে খেলাধুলা করতে পারছেন না। মেলা শুরুর আগেই তারা এই মাঠে মেলার বিরোধীতা করে মানববন্ধন করেছেন। 


স্থানীয় যুবক তারেক আহমদ সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমাদের খেলার মাঠ একটাই। দীর্ঘদিন ধরে এখানে মেলার সরঞ্জাম পড়ে আছে। ফলে আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না। মাঠ যখন চালু ছিল তখন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণরা খেলতে আসত। আমরা চাই অবিলম্বে এসব সরঞ্জাম পরিষ্কার করে মাঠকে খেলার উপযোগী করে তোলা হোক।’

শাহজালাল উপশহর একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. জালাল উদ্দিন সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্লে গ্রুপ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কার্যক্রম চালু আছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় খুলবে। কিন্তু মেলার সরঞ্জাম না সরানোয় আমরা বেকায়দায় পড়েছি। আমরা বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিষ্কার করতে পারছি না।’

উপশহরের এই মাঠটি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অধীনস্থ। জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সিলেট বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সুহেল সরকার সিলেট মিররকে বলেন, ‘এক মাসের জন্য মাঠটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু সময় শেষ এখন মাঠে মালামাল রাখা সম্পূর্ণ অবৈধ।’ মাঠ থেকে সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে মেলা কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। 

এ ব্যাপারে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির (গ্রাসরুটস) জাতীয় সমন্বয়ক অনিতা দাসগুপ্তা সিলেট মিররকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জায়গা ছেড়ে আমরা মেলা বসিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত মেলা চালু করা বা সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

বিসিক সিলেট জেলার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) সুহেল হাওলাদার বলেন, ‘আমরা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও মেলা শুরু করার আশা করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সত্যজিত রায় দাশ সিলেট মিররকে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে জানলাম। আমরা বিষয়টি দেখব।’

এনএইচ/আরসি-০১