আগস্টের বৃষ্টিতে সিলেটে চা উৎপাদন বৃদ্ধির আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২১
০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন



আগস্টের বৃষ্টিতে সিলেটে চা উৎপাদন বৃদ্ধির আশা

চলতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে পরিমাণমতো বৃষ্টি না হওয়ায় চায়ের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। তবে, গত আগস্টে নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় সেই শঙ্কা কেটে গেছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, চলতি মাসেও নিয়মমতো বৃষ্টি হলে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর, সিলেট এবং শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে ৩০ দিনই সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে। মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এক হাজার ৩৪১ দশমিক ৮ মিলিমিটার। ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালের আগস্টেই তিন বছরের তুলনায় এবার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী অমর চন্দ্র তালুকদার বলেন, ‘চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে আগস্টে মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে ৯১৩ দশমিক ৮ মিলিমিটার। মোট ৩০ দিন বৃষ্টিপাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১ আগস্ট ৮৫ মিমি, ২৪ আগস্ট ৮৩ দশমিক ৬ মিমি, ১৫ আগস্ট ৬৩ দশমিক ৭ মিমি এবং ২৩ আগস্ট ৫০ দশমিক ৮ মিমি।’

তিনি আরও জানান, ‘২০২০ সালের আগস্টে ৩১ দিনের মধ্যে মোট ২৬ দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং এই বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যা ৪৩০ দশমিক ২ মিলিমিটার। ২০১৯ সালের আগস্টে ৩১ দিনের মধ্যে বৃষ্টি হয়েছে ২৪ দিন। এদিনগুলোতে রেকর্ডকৃত বৃষ্টিপাতের সংখ্যা ৪০৫ দশমিক ১ মিলিমিটার।’

যদিদও গত মে মাসে ৫৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়া কথা ছিল। তবে, বৃষ্টি হয় ৩৪২ মিলিমিটার। এপ্রিল মাসে ৫শ মিলিমিটার হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি হয় মাত্র ১৪২ মিলিমিটার।

অন্যদিকে, শ্রীমঙ্গল অফিসের পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান জানান, মে মাসের মধ্যে শ্রীমঙ্গলে ২৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। মাত্র ১৫ দিন সেখানে বৃষ্টি হয়েছে।

তবে, আগস্টে শ্রীমঙ্গলেও বৃষ্টি হয়েছে নিয়মিত। ৩০ দিনই বৃষ্টি হওয়ায় চা উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন দেশের চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ (বিসিএস), সিলেটের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান এবং সিনিয়র টি-প্লান্টার গোলাম মোহাম্মদ শিবলি।

তিনি বলেন, ‘সিলেট বিভাগে গত বছরের চেয়ে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় চায়ের জন্য এটি খুবই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বছরের শুরুতে আমরা বেশ খরার মুখোমুখি হয়েছিলাম। ধারণা করা যেতে পারে, বছরের শুরু থেকে এবারের টানা খরায় আমাদের বাগানগুলো এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় পচাত্তর শতাংশ চা উৎপাদনে পিছিয়ে গিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস হলো চা উৎপাদনের প্রধান সময়। এই কয়েকমাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া অসম্ভব নয়। ’

সিনিয়র টি-প্লান্টার জিএম শিবলি বলেন, ‘শুধু বৃষ্টিপাতই এককভাবে নয়, চায়ের সাফল্যনির্ভর উৎপাদনের জন্য মূল বিষয়গুলো হলো- অনুকূল পরিবেশ, সঠিক বৃষ্টিপাত ও স্বাভাবিক তাপমাত্রা। বৃষ্টি এবং রোদের তাপ দুটোই চায়ের জন্য প্রয়োজন।’

১৬৭ বছর আগে ১৮৫৪ সালে সিলেটে মালনীছড়া চা বাগানের মাধ্যমে দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে দেশে উৎপাদনে আছে ১৬৬টি চা বাগান। যার মধ্যে ১৩৫টি চা বাগানই সিলেট বিভাগে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯২টি, হবিগঞ্জ জেলায় ২৪টি এবং সিলেট জেলায় ১৯টি চা বাগান রয়েছে।

আরসি-০২