সিলেটে ডেঙ্গুর শঙ্কা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ২৬, ২০২১
০৪:১৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২১
০৪:১৮ পূর্বাহ্ন



সিলেটে ডেঙ্গুর শঙ্কা বাড়ছে
১১ জায়গায় পাওয়া গেছে এডিসের লার্ভা

সিলেটে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শঙ্কায় বাসাবাড়ি ও পরিত্যক্ত জায়গায় সিটি করপোরেশনের অভিযান চলছে। এরই মধ্যে ১১ স্থানে এডিসের লার্ভার সন্ধান মিলেছে। তবে, সিসিকের নিজেদের তৈরি নাইওরপুলস্থ ‘মিশন চত্বর ফোয়ারা’য় পানি জমে থাকলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের।

সিলেটে ডেঙ্গুর শঙ্কা বাড়ছে। ইতোমধ্যে নগরের ১১টি স্থানে এডিস মর্শার লার্ভ পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু আক্তান্ত দুজনকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তবে তারা দুজনই ঢাকা থেকে এসেছেন।  

ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবেলায় নিয়মিত তৎপরতা শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। বাসাবাড়ি থেকে খোলা জায়গা সর্বত্র চলছে অভিযান। 

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, ১১ জুলাই নগরের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভার্থখলা ও কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এরপর বেশ কিছুদিন অভিযান না চললেও সম্প্রতি আবারও শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১টি স্থানে মিলেছে এডিসের লার্ভা। এর মধ্যে কেবল গতকাল তিনটি স্থান চিহ্নিত করে ধ্বংস করা হয়েছে। গতকাল সন্ধান পাওয়া তিনটি স্থানের মধ্যে রয়েছে, হাওয়াপাড়াস্থ সিলসিলা নার্সারি, লামাবাজারের হাবিব টাওয়ারের গ্যারেজ ও সিলভ্যালী টাওয়ারের গ্যারেজ। 

এর আগে সুবিদবাজারের একটি টাইলসের দোকান, পাঠানটুলার একটি বাসা, দক্ষিণ সুরমায় কিনব্রিজের সামনে টাইলসের একটি দোকান ও টায়ারের দোকানসহ ৮টি স্থানে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। 

এদিকে, সিসিকের নিজেদের তৈরি বিভিন্ন স্থাপনায়ও পানি জমে এডিস মশা তৈরির প্রজনন কেন্দ্রে রূপ নিচ্ছে। এমন চিত্র পাওয়া গেছে নগরের নাইওরপুল পয়েন্টে তৈরি করা ‘মিশন চত্বর ফোয়ারা’সহ বিভিন্ন স্থানে। 

নাওরপুলের রিপন নামের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘ফোয়ারাটি অযতেœ বিনষ্ট হচ্ছে। পানি আটকে থাকায় চুয়ে পড়তে থাকে। রোদ হলেও ফোয়ারায় পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এখানে এডিসের লার্ভা পাওয়া যেতে পারে।’

এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হুমায়ন চত্বর ও মুক্তিযোদ্ধা চতরে পানি জমে থাকায় সেখানে পরীক্ষা চালালেও লার্ভা পাওয়া যায়নি। অডিসের উৎপত্তিস্থল সাধারণত বেশি পানিতে হয় না।’ তবুও নাইওরপুলের ফোয়ারায় অভিযান চালানো হবে বলে জানান তিনি। 

প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সপ্তাহে তিনদিন অভিযান চালানো হয়। যেখানে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায় পরবর্তীতে সেগুলো ধ্বংস করা হয়।’

ডা. জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সাধারণত বাসার ফুলের টব, ডাবের খোসা, টায়ারের দোকানসহ পরিত্যক্ত জায়গায় জমে থাকা পানিতে এডিশ মশার জন্ম হয়।’ 

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় নগরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিলেটে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে। ওই ব্যক্তি ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক। সেখান থেকে তিনি সংক্রমিত হয়ে সিলেটে এসেছিলেন। পরে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল এবং সুস্থ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে গেছেন।’

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘সিলেটে দুই জনের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তবে, ডেঙ্গুর প্রকোপ যেনো না বাড়ে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। 

প্রসঙ্গত, দেশে নতুন করে ২৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই রাজধানীর বাসিন্দা। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ জন। 

এসএইচ/আরসি-০১