পর্যটকে মুখর সাদা পাথর, খুশি ব্যবসায়ীরা

কবির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ


আগস্ট ২২, ২০২১
০৮:৩০ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২২, ২০২১
০৮:৩০ অপরাহ্ন



পর্যটকে মুখর সাদা পাথর, খুশি ব্যবসায়ীরা

দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হয়েছে দেশের সকল পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। খুলে দেওয়ার দ্বিতীয় দিন গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকার সুবাদে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করেছেন কয়েক লাখ পর্যটক।     

সরকারি নির্দেশনা তুলে নেওয়ার প্রথম দিন উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও শুক্রবার ও শনিবার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ছিল তাদের বাঁধভাঙা ঢল ও উল্লাস।

এই দুইদিন সিলেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র সাদা পাথরে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ পিপাসু হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি। ১০ নম্বর নৌকা ঘাট থেকে নৌকাযোগে যেতে হয় মূল পর্যটন কেন্দ্রে। পর্যটকদের উপস্থিতি বেশি থাকায় নৌকার সংকট ছিল উল্লেখযোগ্য। নৌকার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা ও নৌকা না পাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে পর্যটকদের। খাবারের জন্য দুপুরে রেস্তোরাঁগুলোতে প্রচুর ভিড় ছিল। অনেকে  বসার আসন খালি না পেয়ে দাঁড়িয়েই খেয়েছেন দুপুরের খাবার।

কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা জানান, যান্ত্রিক জীবনের একটু ক্লান্তি দূর করতে বিনোদনের খোঁজে মানুষজন ছুটে আসছেন জল-পাথরের মিলনস্থল মায়াবী পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরে। শুক্রবার সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রে ছিল পর্যটকদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। স্পটে পর্যটকদের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকা মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন সাদা পাথরে।

আর এমন পর্যটক সমাগমে খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন পর্যটন বন্ধ থাকায় বন্ধ লোকসানের মুখে পড়েছিলেন তারা। তবে এবার তারা আশা করছেন ভালো আয়-রোজগার হবে এবং ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। 

কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস খন্দকার জানান, দীর্ঘদিন পরে পর্যটন কেন্দ্র খোলায় ছুটির দিনে সাদা পাথরে এসেছেন প্রচুর মানুষ। যার ফলে বেচা-বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে। 

ফটোগ্রাফার জিহাদ আলী জানান, শুক্রবার প্রচুর পর্যটক এসেছেন। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দেড় হাজার টাকা আয় করেছি। এতদিন বন্ধ থাকায় সরকারি ছুটির দিনে পর্যটকদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল সাদা পাথর এলাকা। দীর্ঘদিন পরে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় এত পর্যটক এসেছেন বলে তার ধারণা।

দীর্ঘ দিন লকডাউনে গৃহবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে ওঠা বদরুল আলম সুরাজ বন্ধুদের নিয়ে সিলেট শহর থেকে সাদা পাথর ভ্রমণে আসেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে সাদা পাথরে এসে তাদের ভালো লেগেছে বলে জানালেন বদরুলের বন্ধু স্বাধীন আলম পাপলু।

সাদা পাথর নৌকাঘাট ও গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারাদার দিলোয়ার মাহমুদ রিপন জানান, এপ্রিল মাসে ইজারা নেওয়ার পর থেকে ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হয় পর্যটন কেন্দ্র। যার ফলে আমাদের কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্র খোলা রাখে, তাহলে আমরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আশা করছি। শুক্রবার সকাল থেকেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে সাদা পাথরে। সময় যত বেড়েছে, মানুষের আনাগোনা ততই বেড়েছে। নৌকাপ্রতি ৮০০ টাকা করে তিন থেকে চার শতাধিক নৌকা শুক্রবারে চলাচল করেছে।

কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, সাদা পাথর এলাকায় শুক্রবার সকাল থেকে হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়েছে ভোলাগঞ্জ। সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির দিন অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় ভিড় বেড়েছে। পর্যটন কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে পর্যটকদের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু মুসা নাসের চৌধুরী সরেজমিনে পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে নজরদারি করেছেন।


এমকে/আরআর-০২