স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যতিক্রমী সেবা দিচ্ছেন সাংবাদিক শামীম

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ০৪, ২০২০
০৯:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০৪, ২০২০
১১:১৩ অপরাহ্ন



স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যতিক্রমী সেবা দিচ্ছেন সাংবাদিক শামীম

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে লকডাউনে হাট-বাজার, দোকান-পাট, শিল্প- কারখানা, শপিং মল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় চরম বির্পযয়ের মধ্যে পড়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী কোনো কাজ-কর্ম করতে পারছেন না। আয় উপার্জনও বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে ঘরবন্দী পুরুষরা চুল-দাড়ি কাটা নিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছেন। উপায় না দেখে অনেকে মাথা ন্যাড়া করছেন। এ অবস্থায় যারা চুল-দাড়ি কাটতে পারছেন না তাদেরকে সেবা দিচ্ছেন বালাগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক শামীম আহমদ। লকডাউন শুরুর পর থেকে তিনি নিজ বাড়িতে এলাকার মানুষকে ব্যতিক্রমী এই সেবা দিচ্ছেন।  

দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক সিলেট মিরর ও এনটিভি ইউরোপের বালাগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি শামীম আহমদ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে কোনো ধরনের বিনিময় ছাড়াই সকল বয়সী মানুষের চুল-দাড়ি কেটে-ছেঁটে দিচ্ছেন। যারা সেবা নিতে আসেন তারা গোসল করে পরিষ্কার কাপড় পরিধান করেন। এরপর তাদের শরীর ও পরিধেয় কাপড়ে জীবাণু নাশক স্প্রে করে এবং হেক্সিসল লাগিয়ে চুল-দাড়ি কাটতে বসানো হয়। এভাবে প্রতিদিন দশ-পনের জনকে সেবা দিচ্ছেন তিনি। 

সাংবাদিক শামীম আহমদ বলেন, ‘এই কাজটা খুবই নিখুঁতভাবে সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। আমি ক্লাস ফাইভে পড়াকালীন সময়ে শখ করে এই কাজটি শিখেছি। এরপর চুল কাটার সব ধরনের যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করি। ছাত্র থাকাবস্থায় ছুটির দিনে এলাকার সববয়সী মানুষকে সেবা দিতাম। সাম্প্রতিক লকডাউনে বাজারের সেলুনগুলো বন্ধ থাকায় চুল-দাড়ি কাটার জন্য এলাকার মানুষজন আমার কাছে আসেন। কিন্তু সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি চিন্তা করে প্রথমে আগ্রহী হইনি। মানুষকে ফিরিয়ে দেয়াটাও আমার কাছে খারাপ লাগত। এরপর স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে সেবা দেয়া শুরু করি।’ 

দক্ষিণ রিফাতপুর গ্রামের বাসিন্দা ওসমানীনগরের গোয়ালা বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সাংবাদিক শামীম আহমদ একজন নিরহঙ্কার, পরোপকারী ও প্রচার বিমুখ মানুষ। ছোটকাল থেকেই তিনি এলাকার মানুষকে এই সেবা দিয়ে আসছেন। আমার ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত আমি তার কাছ থেকে এই সেবাটি পাচ্ছি।’ 

বালাগঞ্জ উপজেলা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি-ছড়াকার আ.হ ইমন শাহ বলেন, ‘সাংবাদিক শামীম আহমদের এই ব্যতিক্রমী সেবাটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরনের সেবা পেয়ে গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও কর্মহীন মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।’  

সাপ্তাহিক কুশিয়ারার কূল পত্রিকার প্রকাশক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হুসাইন আহমদ বলেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজ উন্নয়ন ও সমাজ সচেনতার পাশাপাশি মানব কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনাকালে সাংবাদিক শামীম আহমদ যে সেবা দিচ্ছেন সেটি মানব সেবার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।’

 

এসএ-০১/এনপি-০২