ঘরে বসেই ভার্চুয়াল ক্লাসে পাঠ নিচ্ছে রাইজ স্কুলের শিক্ষার্থীরা

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ০৪, ২০২০
০৮:৩০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০৪, ২০২০
০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন



ঘরে বসেই ভার্চুয়াল ক্লাসে পাঠ নিচ্ছে রাইজ স্কুলের শিক্ষার্থীরা

ভার্চুয়াল ক্লাসে ল্যাপটপের সাহায্যে ক্লাস নিচ্ছেন রাইজ স্কুলের এক শিক্ষক। বাসা থেকে ক্লাসে মনযোগী এক শিক্ষার্থী।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের মতো সিলেটেও সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। লাগাতার স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদান চালু করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও নানা সীমাবদ্ধতায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি চালু করতে পারেনি। তবে এক্ষেত্রে ভালো সাড়া জাগিয়েছে সিলেটের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘রাইজ স্কুল’। ঘরে বসেই স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভার্চুয়াল ক্লাসে পাচ্ছে শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ। এ ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বিপুল সাড়া জাগিয়েছে।  

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানে গত ২২ মার্চ থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদান শুরু হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানের আইটি টিমের মাধ্যমে শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাস সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর গত ২৯ মার্চ থেকে মাইক্রোসফট টিমের সহায়তায় ক্লাস-রুটিন মেনে পাঠদান করে যাচ্ছেন রাইজ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সমন্বয়ের কারণে শিক্ষার্থীরাও ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে দ্রুত সময়ের মধ্যে।

নতুন এই পদ্ধতিতে পাঠদান শিক্ষার্থীরা খুব উপভোগ করছে জানিয়ে স্কুলের শিক্ষিকা লিপা হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যাতে এক ঘেয়েমি না লাগে সেজন্য পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে অনলাইন কুইজ, অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাসের কাজ এবং বাড়ির কাজ সম্পন্ন করছে শিক্ষার্থীরা।’

ল্যাপটপ, ট্যাবের মতো ডিভাইসের সাহায্যে ঘরে বসেই ভার্চুয়াল ক্লাসে মনযোগী শিক্ষার্থীরা। ছবি- সিলেট মিরর

 

স্কুলের উদ্যোগের প্রশংসা করে স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবক এহতেশামুল করিম অনু বলেন, ‘আমার বাচ্চারা স্কুলকে মিস করছে না। আমি খুব অবাক হয়েছি এই লকডাউনের সময় তারা খুবই অ্যাকটিভ হয়ে তাদের পড়াশুনা করে যাচ্ছে৷’ স্কুলের এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার মতো জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে ক্লাসের ব্যাপারে সঠিক এবং দ্রুত পরিকল্পনা করে সবকিছু পরিচালনা করছেন। এতে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে না।’

স্কুলের হেড অব আইসিটি দোলা বড়ুয়া জানান, প্রতি ক্লাস শুরু করার আগে একটি ভিডিও ট্রেনিং এর মাধ্যমে সকল ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের অবগত করা হয়ে থাকে। ভিডিওটির মাধ্যমে কিভাবে অনলাইন ক্লাসে কানেক্টেড হতে হবে, কিভাবে একজন শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে তার পার্ফরম্যান্স বাড়াতে পারে এসকল যাবতীয় বিষয়ে ক্লাসের আগেই বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়।

রাইজ স্কুলের হেড অব প্রাইমারী স্কুল জিনাত মোস্তফা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উৎসাহ নিয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। উপস্থিতির হার দিন দিন বাড়ছেই।’ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও এই পদ্ধতিতে ব্যাপক উৎস দেখিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, রাইজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে অনলাইন ক্লাসসমূহের খন্ডচিত্রগুলো নিয়মিতই তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপশি শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের ক্লাস করার ক্ষেত্রে কারিগরি সমস্যা সমাধানে স্কুলের বিশেষ আইটি টিম কাজ করছে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন ক্লাস করতে পারছে তারা।’

নতুন এই পাঠদান পদ্ধতি সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন রাইজ স্কুলের প্রিন্সিপাল মার্ক এডওয়ার্ড। তিনি বলেন, ‘করোনা সংকটে লকডাউনের এই সময়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে রাইজ স্কুল প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত তা সাফল্যের সঙ্গে চলছে।’ এ সময়ে অনলাইনে পাঠদানের ক্ষেত্রে রাইজ স্কুল অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য নিজেকে আদর্শ হিসেবে তৈরী করে তুলেছে বলে তিনি মনে করেন। 

 

এএফ-১৩