খাবার জুটানোই বড় চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মার্চ ৩১, ২০২০
১১:৫০ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০১, ২০২০
০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন



খাবার জুটানোই বড় চ্যালেঞ্জ
বেকায়দায় শ্রমজীবী মানুষ

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম ও চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সিলেটের হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে কাজ হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, শ্রমজীবীসহ নিম্ন আয়ের মানুষজন। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাদের কাছে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের চেয়ে পেট চালানোই বড় চ্যালেঞ্জ। 

করোনা ভাইরাসের কারণে গৃহবন্দি সিলেট নগরের ৬৫ হাজার পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংগঠন, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগেও গৃহবন্দি নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু হয়েছে। কিন্তু সহায়তার পরিমান যথেষ্ঠ না হওয়ায় অনেক পরিবারই খাদ্য সংকটে ভুগছে। কথা হয় চৌহাট্টার ফুটপাতের চা বিক্রেতা অভি দাসের সঙ্গে। তিনি একাই পুরো পরিবার চালান। চা বিক্রির ওপরই নির্ভরশীল পুরো পরিবার। এমনিতে প্রতিদিন অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ তার এখানে চা খেতে আসতেন। কিন্তু ২৬ মার্চ থেকে তাঁর দোকান বন্ধ। তাই এখন অভি দাসের পরিবার অর্থ সংকটের পাশাপাশি খাবারের চরম সংকটে ভুগছে। 

সিলেটের হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ এভাবেই বেঁচে আছেন। তাদের কাছে করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধের চেয়ে পেট চালানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জের কাজ। তারা তাকিয়ে আছেন সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহায়তার দিকে।

সিলেট নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক নাজমুল মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি সিলেটে রিকশা চালান। এরকম পরিস্থিতিতে তিনি কখনোই পড়েননি। মালিককে প্রতিদিন ৮০ টাকা দিতে হয়। কিন্তু বর্তমানে এই টাকা জোগাড় করাই কষ্টকর হয়ে গেছে। তাই দুই সন্তানসহ পরিবারের অন্যদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। 

ক্বিনব্রিজের পাশের ফুটপাতে বসে থাকা হোসেন আলী বলেন, ‘আজ সকাল থাকি ভ্যানগাড়ি নিয়ে ঘুরিয়ার। কিন্তু কাম পাই না। কয়েকদিন ধরি এক অবস্থা। রাইত বাসাত যাই খালি আতে। ৫০ টেকাও রুজি করতাম পারি না।  একন না খাইয়া মরা লাগব।’

আম্বরখানার অটোরিকশা চালক এরশাদ আহমদ বলেন, ‘আগে প্রতিদিন হাজার-বারোশ টাকা আয় করতাম। আর এখন ৫০০ টাকাও হয় না। এর মধ্যে মালিককে জমা দিতে হয় ৩০০ টাকা । ৬ জনের সংসার। তিন মেয়ে লেখাপড়া করে। একাই সংসার চালাতে হয়। গত দুই দিন টাকা ধার করে বাসায় চাল-ডাল নিয়েছি। এখন পরিবারের সবাইকে নিয়ে উপোস করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ 

এনএইচ-১/এনপি-১/বিএ- ১৪