সিলেটে সার্ভার হ্যাক করে টিকার ম্যাসেজ, থানায় জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ১৬, ২০২১
০৬:০৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০২১
০৬:০৯ পূর্বাহ্ন



সিলেটে সার্ভার হ্যাক করে টিকার ম্যাসেজ, থানায় জিডি

সিলেটে সার্ভার হ্যাক করে অন্তত ১২০ জন মানুষকে মডার্নার প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণের জন্য মোবাইলে (বার্তা) ম্যাসেজ পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে কোনো একসময় সার্ভার হ্যাক করে প্রথম ডোজের অপেক্ষামানদের টিকা গ্রহণের ম্যাসেজ পাঠায় একটি চক্র। পরদিন সকালে আগের টিকাগ্রহণকারীদের ডাটা আপডেট করতে গিয়ে ঘটনা টের পায় সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ। এসময় তারা সার্ভার ব্লক করে দেয়।

তবে এসময়ের মধ্যে অন্তত ১২০ জন মানুষকে মডার্না টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের বার্তা (ম্যাসেজ) পাঠায় চক্রটি। পরে ঢাকায় বিষয়টি অবগত করে সার্ভারের নতুন আইডি ও পাসওয়ার্ড দেয় সিসিক।

এদিকে শুক্রবার রাতে সার্ভার হ্যাক করে টিকা গ্রহণের ম্যাসেজ পাঠানো হলে শনিবার সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে কিছু মানুষ টিকা নিতে জড়ো হন। কিন্তু তাদের কাউকে টিকা দেওয়া হয়নি।

সার্ভার হ্যাকের বিষয়টি নিশ্চিত করে রবিবার (১৫ আগস্ট) রাতে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম সিলেট মিররকে বলেন, 'বিষয়টি টের পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিসিকের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়রির আবেদন করা হয়।'

তিনি বলেন, 'আগের রাতে হ্যাক হলেও শনিবার সকালে বিষয়টি ধরা পড়ার পর পর ঢাকায় অবগত করে আগের আইডি বন্ধ করে নতুন আইডি চালু করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে সার্ভারটি আমাদের আওতায় আছে।'

কারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে এমন প্রশ্নে ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, 'একই সার্ভার দিয়ে বেশ কয়েক জায়গায় বসে কাজ হয়। এজন্য হয়ত কোনোভাবে কিছু হতে পারে। তবে চক্রটি শনাক্ত করতে চেষ্টা চলছে।'

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিলো টাকার বিনিময়ে টিকার ম্যাসেজ বিতরণ করা হচ্ছে। ধারণা করছি ওই চক্রটিই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’

তবে যারা প্রথম ডোজের ম্যাসেজ পেয়ে টিকা নিতে এসেছিলেন তাদের কাউকে টিকা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।

এদিকে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আবু ফরহাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় জিডি হয়েছে। আদালতের অনুমতি পেলে এটার তদন্ত হবে। কারা এটা করেছে তা বের করা হবে।’

সম্প্রতি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার বিনিময়ে ম্যাসেজ ও লাইনে দাঁড়ানো ছাড়া টিকা দেওয়ার কথা বলে অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ জানান কয়েকজন।

তবে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর ভুক্তভোগী ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সরেজমিনে গেলে তাদের পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম।

জানা যায়,  চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রদানের মাধ্যমে সিলেটে শুরু হয় টিকাদান কার্যক্রম। ওই বছরের ৮ এপ্রিল থেকে সিলেটে শুরু হয় অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান। তবে টিকা সংকটের কারণে জুন থেকে বন্ধ হয়ে টিকা প্রদান কার্যক্রম। গত ১৩ জুলাই থেকে শুরু হয় গণটিকা কার্যক্রম। এসময় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় দেওয়া হয় মডার্নার টিকা এবং উপজেলায় দেওয়া হয় সিনোফার্মের টিকা। তবে গত ১২ আগস্টের পর সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রথম ডোজ টিকাদান বন্ধ রয়েছে। ফলে নিবন্ধন করে টিকার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার বাসিন্দা। আর গত ১৪ আগস্ট থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান শুরু হয়েছে।

এনএইচ/আরসি-০৪