স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চড়া সুদের ব্যবসা!

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
০২:৪৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
০২:৪৯ পূর্বাহ্ন



স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চড়া সুদের ব্যবসা!

চোখ ধাঁধানো ডেকোরেশন। সবাই জানে জুয়েলার্সের দোকান। অথচ দোকানের এই চাকচিক্যের পেছনে চলছে চোরাই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় আর চড়া সুদে জমজমাট স্বর্ণ বন্ধক রাখার ব্যবসা। নীতিমালা নেই, বৈধতা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এতে অনেকেই হচ্ছেন প্রতারিত।

সিলেটের বিয়ানীবাজার পৌরশহরে বিপনীবিতানসহ সর্বত্র রয়েছে জুয়েলার্সের দোকান। এর মধ্যে কয়েকটি দোকানের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। এসব দোকানগুলোতে জুয়েলার্স লেখা সাইনবোর্ড থাকলেও কোনো কোনো দোকানে একেবারেই নেই স্বর্ণ। মূলত স্বর্ণের দোকানের সাইনবোর্ড লাগিয়ে কয়েকটি দোকানের মালিক চোরাই স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় আর চড়া সুদে টাকার লেনদেন করে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, বিপদের মুহূর্তে কেউ কেউ এসব দোকানে স্বর্ণ বন্ধক রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে ফেরত দেওয়া হয় না তাদের বন্ধকী সোনা। আবার কারও কারও সঙ্গে রয়েছে চোরাই গ্রুপের লেনদেন। অর্ধেক মূল্যে চোরাই স্বর্ণ কিনে তারা দিনে-রাতে বনে যান লাখ লাখ টাকার মালিক।

চোরাই স্বর্ণ কেনাসহ সুদে টাকা খাটানোর একাধিক অভিযোগ রয়েছে অনেক স্বর্ণ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি খুব সমস্যায় পড়ে স্বর্ণ বন্ধক রেখে কিছু টাকা নেন। তিনমাসের মধ্যে ওই টাকা সুদসহ ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি নির্দিষ্ট সময়ে টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। এর ফলে নিজের বন্ধকী স্বর্ণ আর ফেরত পাননি তিনি।

আরও জানা গেছে, বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ উপজেলার প্রায় ২৫টি জুয়েলার্সের দোকান সুদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই সুদের ব্যবসায় শুধু জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠানের মালিকই বিনিয়োগ করেন না, বাইরের অনেক ব্যক্তিও এ কাজে অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। তবে চলমান করোনা মহামারিতে স্বর্ণ বন্ধক ও সুদের ব্যবসা কিছুটা কমেছে।

চোরাই স্বর্ণ কেনা আর সুদের ব্যবসার কোনো অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টানের কর্ণধাররা বলেন, 'নিয়ম তো নেই, তারপরও কিনেছি। অনেকেই তো কেনে।'

এদিকে জানা গেছে, গত কয়েকমাস আগে পৌরশহরের সুভাষ জুয়েলার্সের মালিক সুভাসকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। তিনি এখনও জেলহাজতে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবণী শংকর কর বলেন, 'এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে ক্যাশমেমো কিংবা বৈধ কাগজপত্র এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছাড়া এভাবে স্বর্ণ কেনা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। যারা এমন কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এসএ/আরআর-১০